দূর্গাপূজা স্পেশাল - শরতে আবহাওয়ার পরিবর্তনের সময় সুস্থ থাকার উপায়ঃ
 |
| Kolkatar Chobiwala কে অনেক ধন্যবাদ |
দুর্গাপূজার আর কয়দিন বাকি। মাঠে ঘাটে কাশফুল ফুটেছে। আহা কি সুন্দর মনরোম দৃশ্য। কিন্তু কয়েকদিনের চড়া রোদের পর এখন আকাশ মেঘলা। আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে গোটা বাংলা জুড়ে সব জায়গায় বৃষ্টি হবে। এবং হচ্ছেও। রাতে বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়ে বাড়ি ফেরার পরেই একটু শীতশীত ভাব। তখন ভয় হয় সর্দি জ্বর হবে না তো।
 |
| ছবিটি তুলেছেন Andrea Piacquadio |
শরতের শুরুতে ঝড়-বৃষ্টি হলে মানুষের বড় দুশ্চিন্তা হয়। একদিকে গ্রামে বন্যায় ফসল নষ্ট হওয়ার ভয়। অন্যদিকে শহরে মশার ভয়। এখন জ্বর এলেই ভীষণ টেনশন। চারিদিকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার খবর। তাই জ্বর এলেই চিকিৎসা দেরী না করে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।
তবে রোগে আক্রান্ত হয়ে হওয়ার আগে রোগ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করা যেতে পারে। তাই, শরতের শুরুতে আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় নিজেকে যেভাবে সুস্থ রাখার উপায়গুলো দেখে নেওয়া যাক।
 |
| ছবিটি তুলেছেন Teksomolika |
(i) পর্যাপ্ত জল পান করুনঃ একটু বৃষ্টি পড়া শুরু করলো আর আপনি জল খাওয়া কমিয়ে দিলেন। ওদিকে বাইরে রোমান্টিক মুডে বৃষ্টিতে ভিজছেন। তাহলে কিন্তু দেহের ভেতর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গুলো বলতে শুরু করবে "এ কেমন বিচার!"। শরীরের চাহিদা অনুযায়ী নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন।
 |
| এই ছবিটির জন্য ধন্যবাদ জানাই KamranAydinov কে |
(ii) পাতে রাখুন সবুজ শাকসবজিঃ শরীরকে নিয়মিত পুষ্টির যোগান দিতে সবুজ শাক-সব্জির বিকল্প আর কিছু হতে পারে না। সবজিতে থাকা ফাইবার এবং ভিটামিনের গুনাগুণ সম্পর্কে এখন সবাই কম বেশী জানি। কম আঁচে এবং কম তেল ব্যবহার করে সবজি রান্না করুন। রান্নায় ভালো স্বাদ পাবেন এবং পুষ্টিগুণ বজায় থাকবে। তবে রিফাইন তেলের ব্যাবহার সীমাবদ্ধ রাখুন।
 |
| ভিটামিন C সমৃদ্ধ ফল, ছবিটি তুলেছেন Racool_studio |
(iii) প্রতিদিন অন্তত একটা ফল খানঃ ডায়েটেশিয়ানরা বলে থাকেন যে প্রতিদিন অন্তত একটা ফল খেলে রোগ থেকে অনেকটা দূরে থাকা যায়। তবে পুষ্টিকর কিছু ফল যেমন আপেল এবং নাশপাতির দাম উৎসবের সময় এত বেড়ে যায় যে আমজনতার পক্ষে প্রতিদিন খাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তবে চেষ্টা করবেন সপ্তাহে অন্ততপক্ষে একটা ফল খেতে। তবে যাঁদের ব্লাড সুগার বা কিডনির সমস্যা আছে তাঁরা ফল খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসক বা ডায়েটেশিয়ানের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
 |
| এই ছবিটির জন্য Couleur কে ধন্যবাদ জানাই |
(iv) আদাতে আছে অনেক উপকারঃ অনেকের খুব সহজেই সর্দি কাশিতে ভুগতে শুরু করেন। তাদের এই সমস্যা দূরে রাখার জন্য আদা দিয়ে গ্রিন টি বা লিকার চা খুব ভালো কাজ দেয়। এছাড়া সকালে এক গ্লাস জলের মধ্যে একটু আদার মিশিয়ে খেয়ে নিতে পারেন। এতে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। যখন মুগ ডাল দিয়ে কোনো রেসিপি করবেন তখন তাঁর মধ্যে আদা দিলে রান্নায় ভালো গন্ধ এবং স্বাদ পাবেন। কাশি হলে আদার রাস মধু দিয়ে খেলে বা শুধু আদা ছোট ছোট টুকরো করে খেলেও রাখলে উপকার পাওয়া যায়।
(v) সয়াবিন থেকে শক্তি নিনঃ অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত হয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছেন? দ্রুত শক্তি এবং কর্মক্ষমতা ফিরে পেতে রান্নায় সয়াবিন যোগ করুন। সয়াবিন সবুজ শাকসব্জির তরকারীতে খেতে পারেন। এছাড়া সয়া মিল্ক থেকে তৈরী টোফু রান্না করে খেতে পারেন।
 |
| ধন্যবাদ জানাই NonikYench কে |
(vi) মাছ মাংস বুঝেশুনে খেতে হবেঃ মাছ মাংসের স্বাদ না পেলে আমরা বাঙ্গালীরা যেন খাওয়ার রুচি হারিয়ে ফেলি। তবে আবহাওয়ার পরিবর্তনের সময় মাছ মাংস কিন্তু একটু বুঝে শুনে পরিমাণ মত খেতে হবে। জ্বরে শরীর খারাপ হলে মুখে অরুচি আসে তখন একদম কম মশলা দিয়ে রান্না করা ছোট মাছ অথবা মুরগির মাংস খাবেন। শরীর সুস্থ থাকা অবস্থায় বড় মাছ এবং রেড মিট খাবেন।
 |
| ছবিটি তুলেছেন Yanalya |
(vii) নিয়মিত ব্যায়ম এবং শরীরচর্চাঃ
যদি আপনাকে দীর্ঘসময় ধরে বসে থেকে (যেমনঃ কম্পিউটারের সামনে) কাজ করতে হয়, তাহলে আপনাকে নিয়মিত হাঁটা, দৌড়ানো, ব্যায়ম করা, ওজন তোলা, জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করা ইত্যাদির মধ্যে যেটাতে আপনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন, সেটা আপনাকে বেছে নিয়ে নিয়মিত করতে হবে।
 |
| এই ছবিটির জন্য ধন্যবাদ জানাই MabelAmber কে |
যদি আপনাকে কর্মস্থলে ঘাম ঝরিয়ে কাজ করতে হয় অর্থাৎ নিয়মিত কায়িক পরিশ্রমের মাধ্যমে আপনাকে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে হয়, তাহলে আপনাকে আলাদা করে অতিরিক্ত শরীরচর্চা করার দরকার নেই। আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ এবং বিশ্রামের উপরে গুরুত্ব দিন।
প্রতিদিন নিদিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যানঃ
আমরা যারা আধুনিক ডিজিটাল লাইফে অভ্যস্ত, প্রায়শই আমরা আমাদের শরীরের অতি গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া ঘুমকে অবহেলা করে ফেলি। প্রতিদিন একটা নিদিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং নিদিষ্ট সময়ের জন্য ঘুমানো ভীষণ জরুরী। যাদের অনিদ্রার সমস্যা আছে তারা ঘুমানোর দুই ঘন্টা আগে থেকে ডিজিটাল ডিভাইস থেকে দূরে থাকুন এবং বই পড়ার চেষ্টা করুন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন